কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার ‘শ্যাডো ফ্লিট’ হিসেবে পরিচিত দুটি তেলবাহী ট্যাংকারে ড্রোন হামলার দায় স্বীকার করেছে ইউক্রেন। এসবিইউ–এর এক কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, নৌবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে ‘সি বেবি’ নামের সামুদ্রিক ড্রোন ব্যবহার করে এ হামলা চালানো হয়েছে। রাশিয়া এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য দেয়নি।
হামলার শিকার গাম্বিয়ার পতাকাবাহী ট্যাংকার কাইরোস থেকে ২৫ জন নাবিককে উদ্ধার করেছে তুরস্কের কোস্টগার্ড। উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে চারজন বাংলাদেশি—মাহফুজুল ইসলাম প্লাবন, আজগর হোসেন, আল আমিন হোসেন এবং হাবিবুর রহমান। তারা বর্তমানে তুরস্কের একটি হোটেলে নিরাপদে আছেন।
শুক্রবার রাতে কাইরোস–এ প্রথম বিস্ফোরণ ঘটে। জাহাজটি তুরস্কের উপকূল থেকে প্রায় ২৮ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে ১২টি টাগবোট ও কোস্টগার্ডের নৌযান পাঠিয়ে সকল নাবিককে সরিয়ে নেওয়া হয়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, সবাই সুস্থ।
প্রায় ৩০ মিনিট পর দ্বিতীয় হামলা হয় আরেক তেলবাহী ট্যাংকার বিরাট–এ। এবারও জাহাজটি তুরস্কের উপকূলের বাইরে ছিল। পানির ওপরে থাকা অংশ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আগুন লাগেনি। ২০ জন নাবিক নিরাপদে ছিলেন এবং উদ্ধার সহায়তা চাননি। তুরস্ক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে অগ্নিনির্বাপক টাগবোট পাঠায়।
তুরস্কের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানায়, হামলাগুলো “নৌ–চলাচল, প্রাণহানি, সম্পদ ও পরিবেশের জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করছে।” ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, টাগবোটগুলো কাইরোস–এর ডেকে ছড়িয়ে পড়া আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে; পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশি নাবিক আজগর হোসেন বলেন, “হামলা ছিল সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত। ইউক্রেনীয় রোবোটিক নৌকায় আঘাত লাগতেই আগুন লেগে যায়।” মেরিন ফ্লিটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, নাবিকদের দেখভাল করছে জাহাজমালিক; তাদের দেশে পাঠানো হবে নাকি অন্য জাহাজে দায়িত্ব দেওয়া হবে—এ নিয়ে সিদ্ধান্ত অপেক্ষমাণ।
এদিকে, কৃষ্ণ সাগরের নোভোরোসিস্ক বন্দর এলাকাতেও সামুদ্রিক ড্রোন হামলা হয়েছে বলে কাস্পিয়ান পাইপলাইন কনসোর্টিয়াম জানিয়েছে। কাজাখস্তান জানিয়েছে, প্রয়োজনে রপ্তানি বিকল্প রুটে সরিয়ে নেওয়া হবে। ইউক্রেন আগেও একাধিকবার এ অঞ্চলে রুশ তেল–ইনফ্রাস্ট্রাকচারে হামলা চালিয়েছে।