২০১৬ থেকে ২০২২—এই ছয় বছরে বাংলাদেশে গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্য কমেছে শহরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হারে। বিশ্বব্যাংকের সদ্য প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের দারিদ্র্য ও বৈষম্য মূল্যায়ন ২০২৫’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৃষি খাতের দৃঢ় পুনরুত্থান গ্রামীণ দরিদ্রতা হ্রাসের প্রধান চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, এই সময়ে গ্রামীণ দারিদ্র্য কমেছে ৮.৫ শতাংশীয় পয়েন্ট, যেখানে শহরে কমেছে ৪.৬ শতাংশীয় পয়েন্ট। গ্রামে ভোগব্যয়ের প্রবৃদ্ধি ছিল শক্তিশালী ও ‘দারিদ্র্যবান্ধব’; এর প্রভাব গ্রামীণ দরিদ্রতা দ্রুত কমিয়েছে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, তিনটি খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল বিপরীতমুখী—
-
কৃষিতে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১.৪ শতাংশীয় পয়েন্ট,
-
শিল্পে কমেছে ১.১,
-
সেবাখাতে কমেছে ০.২ শতাংশীয় পয়েন্ট।
ফলস্বরূপ কর্মসংস্থানেও কৃষিই সবচেয়ে বড় অবদানকারী খাত হয়ে ওঠে: ২০২২ সালে মোট কর্মসংস্থানের ৪৫.৩% কৃষিতে, এবং নতুন সৃষ্ট চাকরির ৮০% এসেছে এ খাত থেকে। কৃষিনির্ভর পরিবারগুলো একাই গ্রামীণ দারিদ্র্য হ্রাসের ৫০% অবদান রেখেছে—যেখানে ২০১০–১৬ সময়ে এই অবদান ছিল মাত্র ৩০%।
এদিকে গ্রামীণ বৈষম্য কমে গিনি ২৯.২ → ২৮.২, কিন্তু শহরে বৈষম্য বেড়ে ৩৩.১ → ৩৪.৫ হয়েছে। শহুরে আয় স্থবিরতা, কম চাকরির সৃষ্টি, সেবা খাতের মন্থরতা এবং বেতন–সম্পদ–রেমিট্যান্সে বৈষম্য বৃদ্ধিকে এ প্রবণতার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্বব্যাংক।
শহরে দারিদ্র্যের হার এখনো কম (১৪.৭%), গ্রামে বেশি (২০.৫%); তবে শহরে দরিদ্র মানুষের মোট সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে—২০২২ সালে দেশের প্রতি চারজন দরিদ্রের একজন শহরে।
প্রতিবেদনটি বলছে, একসময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অগ্রদূত শহরাঞ্চল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মন্থর হয়ে পড়েছে শিল্পখাতে নতুন কাজ সৃষ্টির অভাব এবং বহু পরিবারের আয় থমকে যাওয়ার কারণে। এর ফলে গ্রাম–শহরের বৈষম্য নতুনভাবে তীব্র হচ্ছে।