হংকংয়ের ওয়াং ফুক কোর্ট অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক মানুষের প্রাণহানির পর শহরজুড়ে তিন দিনের শোক পালিত হচ্ছে। শনিবার শোকের প্রথম দিনে প্রধান নির্বাহী জন লি ও সরকারি কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে তিন মিনিট নীরবতা পালন করেন; সব সরকারি ভবনে পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। শহরের ১৮টি স্থানে শোকবই খোলা হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষ নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারে।
ব্রিটিশ রাজা চার্লস এক বিবৃতিতে ঘটনাটিকে “হতভম্ব করে দেওয়ার মতো বেদনাদায়ক” বলে অভিহিত করেন এবং নিহতের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের তদন্তে নতুন অগ্রগতি হয়েছে। ওয়াং ফুক কোর্টের সংস্কার কাজের সঙ্গে জড়িত আরও আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে হংকং পুলিশ। এতে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১। পুলিশের সন্দেহ—দায়িত্বে অবহেলা, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ও নিরাপত্তাজনিত ত্রুটিই এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণ।
শুক্রবার উদ্ধার অভিযান শেষে ১২৮ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করা হয়। তবে এখনও প্রায় ২০০ জন নিখোঁজ, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। পোড়া ভবনগুলোতে মৃতদেহ শনাক্তকারী ইউনিটের সদস্যরা এখনও তল্লাশি চালাচ্ছেন; এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে মাত্র ৩৯ জন।
বুধবার বিকেলে ৩২ তলা করে আটটি ভবন নিয়ে গঠিত এই কমপ্লেক্সে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। দুই দিনের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও, ৪ হাজার ৬০০ বাসিন্দার বৃহৎ এই আবাসনে ফায়ার অ্যালার্ম কাজ না করার অভিযোগ উঠেছে।
শোকার্ত পরিবারগুলো ঘটনাস্থলে ফুল রেখে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন; কেউ কেউ উদ্ধারকর্মীদের তোলা ছবির মাধ্যমে প্রিয়জনকে শনাক্ত করার কঠিন দায়িত্ব পালন করছেন।
ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে, তাদের ছয় নাগরিক মারা গেছেন। ফিলিপিন্স বলছে, তাদের এক নাগরিক গুরুতর আহত, একজন নিখোঁজ, আরও ২৮ জনের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য নেই।
১৯৪৮ সালের পর হংকংয়ে এটি সবচেয়ে প্রাণঘাতী অগ্নিকাণ্ড; সে বছর এক গুদামে আগুনে মারা যান ১৭৬ জন।